পবিত্র রমজান ও দূর্ণীতিবাজ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী
পবিত্র মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য এক তাৎপর্যপূর্ণ ইবাদত বন্দেগির একটি মাস। এই মাসে সমগ্র মুসলমান ইবাদতের মাধ্যমে নিজেদের পাপের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করে থাকে। সারা বিশ্বের মুসলমান এই মাসে নিজেদের সংযত রাখার চেষ্টা করে। তারা পানাহার থেকে নিজেকে বিরত রাখে। আত্মসংযমে মগ্ন থাকে।
প্রকৃত মুসলমােনরা দান ও সদগা করে থাকে। সারা বিশ্বের মুসলমান গরীব দু:খীদের খাদ্য বস্ত্র দান করে পূণ্য কামানোয় নিজেকে নিয়োজিত রাখে। এই মাসে মুসলমানরা জাকাত প্রদান করে। সারা বিশ্বের মুসলমান ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের দাম কমিয়ে দিয়ে অল্প আয় করেন যাতে রোজদার ব্যক্তিরা নিশ্চিন্তে তাদের সিয়াম পালন করতে পারে। সমগ্র বিশ্বের ইমানদার মুসলিম ব্যবসাীরা পণ্যদ্রব্যের দাম হ্রাস করে থাকে যাতে করে রোজাদার ব্যক্তিগণ কম দামে পণ্য ক্রয় করে ইফতার ও সেহেরী করতে পারে।
বিভিন্ন দেশের মুসলিম ব্যবসায়ীরা এই মাসটিকে খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে। তাদের চিন্তাই থাকে যেন রোজাদার ব্যক্তিগণ কোন ভাবে যেন না ঠকে। বিভিন্ন দেশের মুসলিম ব্যবসায়ীগণ পূণ্য লাভের আসায় তাদের পণ্যের থেকে রমজান মাস উপলক্ষে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্হা করে থাকে। রমজান মাস আসলে সমগ্র বিশ্বের ব্যবসায়ীগন ইসলামি শরিয়া মোতাবেক চলতে চেষ্টা করেন। এবং রমজান মাসের সাথে জরিত নিত্যপণ্যের দাম কমিয়ে দেন। এই মাসটাতে উনারা কম লাভ করেন। কোন কোন ব্যবসায়ীতো ফ্রীতেও খাদ্যদ্রব্য বিতরণ করেন।
আর ওপর দিকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের চরিত্র সম্পূর্ণ তার উল্টো। তাদের দৃষ্টিতে এ পবিত্র রমজান মাস হচ্ছে ধান্দার মাস।অবৈধ অর্থ আয়ের মাস। অধিকাংশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা এই পবিত্র মাসে পাপাচারে লিপ্ত থাকে। কিভাবে মানুষকে ঠকানো যায় এ চিন্তা যেন তারা ১১ মাস ধরে করে থাকে। পূণ্য লাভের চেয়ে অর্থ উপার্জনে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠে। বাংলাদেশে পবিত্র মাহে রমজানে বাঙ্গালীরা কিছু বিশেষ খাদ্য খেয়ে থাকে। যেমন- ইফতারের সময় তারা শশা খায়, শরবত পান করে, বেগুনি ভাজা খায়, পিয়াজু খায় এবং আরো বিভিন্ন পদের ফলমূল খেয়ে থাকে। এই সমস্ত জিনিস খেতে ও তৈরি করতে যে সমস্ত জিনিসের প্রয়োজন হয় সেগুলোর দাম বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা দ্বিগুণ করে ফেলে।
রমজান মাসে মানুষ সারাদিন রোজা রাখার ফলে গলা শুকিয়ে যায় তখন ইফতার করার জন্য প্রয়োজন হয় শরবত ও শশার। আর শরবত তৈরী করতে প্রয়োজন হয় চিনির। বাংলাদেশের মুদি ব্যবসায়িরা এই পবিত্র রমজান মাসে চিনির দাম দ্বিগুণ করে ফেলে। শশার দাম আকাশচুম্বী হয়ে উঠে, বেগুনেতো যেন আগুন লেগে যায়। মানুষকে জিম্মি করে অধিক অর্থ উপার্জন করে।
অথচ তারাও রোজা রাখে। রোজার অর্থ হলো সংযম। নিজের লোভ, কাম, ক্রোধ, উচ্চাকাঙ্খাকে নিয়ন্ত্রণ করার নামই হচ্ছে মাহে রমজান। অথচ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা লোভের বশবর্তী হয়ে এই পবিত্র রমজান মাসে লোভী হয়ে উঠে। মানুষকে কষ্ট দিয়ে হারাম উপার্জন করে থাকে। রমজান মাসে অধিকাংশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা হয়ে উঠে চোর, বাটপার, জিম্মিকারী। এই রমজান মাসে অধিকাংশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মিথ্যাবাদী ও কুচক্রী হয়ে যায়।
ওদের নামাজ রোজা কিছুই হয় না কারণ তারা এই পবিত্র মাসে হয়ে উঠে অপবিত্র এবং অসংযমী। তারা হয়ে উঠে মিথ্যুক, বর্বর ও অবৈধ অর্থ উপার্জনকারী পশু। এই সমস্ত লোকের ইবাদত মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কখনও কবুল করবেন কিনা আমার বোধগম্য হয় না। কারণ তারা এই পবিত্র মাসকে করেছে কলুষিত।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিশেষ করে মুদি কারবারি, কাঁচামাল ও সবজী বিক্রেতা ও বস্ত্র ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা পবিত্র রমজান মাসে হয়ে উঠে চোর,বাটপার ও মিথ্যাবাদী। তারা লোক দেখানো ইবাদত করে। এই সমস্ত ব্যবসায়ীরা জাকাতটা পর্যন্ত ইসলামি আইন অনুযায়ী আদায় করে না। কিছু কিছু ব্যবসায়ী আবার জাকাত দেওয়ার নাম করে শাড়ী ও লুঙ্গি তৈরী করে অধিক দামে বস্ত্র বিক্রি করে। ওদের লোভ লালসা দেখলে মনে হয় মহান আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালাহ বুঝি এই মাসটিকে শুধু মাত্র বাংলাদেশি দূর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের জন্য হারাম রিজিককে বৈধতা দিয়ে দিয়েছেন।
তারা অর্থের নেশায় পাপ পূন্য সব ভুলে যায়। মাহে রমজানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তারা মানতে চায় না। পাপ পূন্য বলে যে একটি কথা আছে এবং হারাম-হালাল বলে যে একটা ভাষা আছে এবং দোজখ ও জাহান্নাম বলে যে একটা স্হান আছে সেটা মনে হয় তারা ভুলে যায়। মনে হয় যেন তারা কোনদিনও মৃত্যুবরণ করবে না। জাহান্নামের অগ্নি তাদের স্পর্শ করবে না।
Comments
Post a Comment